Description
শিং কুচি হলো গবাদি পশুর শিং গুঁড়ো করে তৈরি একটি জৈব সার। এটি মূলত নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ এবং গাছের সবুজ বৃদ্ধি ও পাতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিং কুচি হাড়গুঁড়ার তুলনায় ধীরে ধীরে মাটিতে মেশে, যা দীর্ঘ সময় ধরে উদ্ভিদকে পুষ্টি সরবরাহ করে।
শিং কুচির পুষ্টিগুণ
উপাদান | উপকারিতা |
---|---|
নাইট্রোজেন (N) – ১২-১৫% | গাছের সবুজ পাতা ও কাণ্ড বৃদ্ধিতে সহায়ক। |
ফসফরাস (P) – ১-২% | শিকড় গঠনে সহায়ক। |
ক্যালসিয়াম (Ca) – ২-৩% | উদ্ভিদের গঠন মজবুত করে। |
বাগানে শিং কুচির উপকারীতা
✅ গাছের সবুজ বৃদ্ধি বাড়ায় – সবজির গাছ, ধান, গম, পাতা বেশি হয় এমন গাছের জন্য উপকারী।
✅ লম্বা সময় ধরে পুষ্টি সরবরাহ করে – এটি ধীরে ধীরে মাটিতে মিশে যায়, তাই দীর্ঘস্থায়ী পুষ্টি দেয়।
✅ জৈবিক ও পরিবেশবান্ধব সার – রাসায়নিক নাইট্রোজেন সারের চেয়ে নিরাপদ।
✅ শিকড়ের বিকাশে সহায়ক – শিকড়ের গঠন মজবুত করে গাছের স্থায়িত্ব বাড়ায়।
✅ মাটির গুণাগুণ উন্নত করে – কম্পোস্টের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মাটির উর্বরতা বাড়ে।
শিং কুচির ব্যবহার পদ্ধতি
১. সরাসরি প্রয়োগ
🔹 গাছ লাগানোর সময়: ১০০-১৫০ গ্রাম (১ মুঠো) শিং কুচি মাটির সাথে মিশিয়ে নিন।
🔹 সবজি ও ধান-গমের জন্য: প্রতি ২-৩ মাস পরপর ৫০-১০০ গ্রাম ছিটিয়ে মাটির সাথে মেশান।
২. কম্পোস্টের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার
🔹 শিং কুচি কম্পোস্টের সঙ্গে মিশিয়ে দিলে নাইট্রোজেন দীর্ঘস্থায়ীভাবে মাটিতে থেকে যায়।
🔹 প্রতি ১০ কেজি কম্পোস্টে ৫০০ গ্রাম শিং কুচি মেশানো যেতে পারে।
৩. তরল সার তৈরি করে ব্যবহার
🔹 ১ কেজি শিং কুচি ১০ লিটার পানিতে ৭ দিন ভিজিয়ে রেখে তরল সার তৈরি করুন।
🔹 প্রতি গাছের গোড়ায় ২০০-২৫০ মি.লি. প্রয়োগ করুন (১৫-২০ দিন পরপর)।
সতর্কতা ও বাড়তি টিপস
✅ অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না – নাইট্রোজেন বেশি হলে গাছ বেশি পাতা গজাবে, কিন্তু ফুল-ফল কমবে।
✅ অন্য সার যেমন ফসফরাস ও পটাশিয়ামের সাথে ভারসাম্য রেখে ব্যবহার করুন।
✅ প্রাণীদের নাগালের বাইরে রাখুন – অনেক সময় কুকুর বা অন্য প্রাণী শিং কুচির গন্ধে আকৃষ্ট হতে পারে।
শেষ কথা
শিং কুচি একটি প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন সার যা সবুজ গাছের জন্য দুর্দান্ত পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে মাটিতে কাজ করে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে গাছের বৃদ্ধি বাড়ায়। সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করলে এটি গাছের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে।